Header Ads Widget

Responsive Advertisement

খনিজ(Minerals) | খনিজ সম্পদের প্রকারভেদ (Classification of Mineral Resource)

খনিজ(Minerals)


∆খনিজের সংজ্ঞা (Definition of Minerals)  সাধারণভাবে খনিজ দ্রব্য বলতে ভূপৃষ্ঠের উপর ও নীচ থেকে যেসব দ্রব্য উত্তোলন করা হয়, তাদের বোঝায়। যেমন- মাটির নীচ থেকে কয়লা, লৌহ আকরিক, তামা, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি উত্তোলন করা হয়, তেমনি ভূপৃষ্ঠ থেকে লবণ, চুনাপাথর ইত্যাদি আহরণ করা হয়। কিন্তু ‘খনিজ’-এর একটি বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা দেওয়া যায়, যথা—প্রকৃতি থেকে পাওয়া যায়— এমন সমস্ত বস্তু, যার রাসায়নিক উপাদান ও পারমাণবিক গঠন সুনির্দিষ্ট এবং যা অজৈব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়, তাকেই খনিজ বলে। 

বৈশিষ্ট্য : খনিজের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল—— 

• পৃথিবীর সর্বত্র সমস্ত খনিজ সম্পদ সমানভাবে পাওয়া যায় না।

• মানুষের দক্ষতা ও কারিগরি কৌশলের দ্বারা খনিজ সম্পদের ব্যবহারযোগ্যতা নির্ধারিত হয়। 

• এই কয়লা ও খনিজতেল ছাড়া অধিকাংশ খনিজ সম্পদ অজৈব প্রকৃতির। 

• খনিজ সম্পদ অপুনর্ভব প্রাকৃতিক সম্পদ, অর্থাৎ বারংবার ব্যবহারের ফলে এগুলি ফুরিয়ে যেতে পারে ।

• কোনো অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক ও জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্যের ওপর খনিজ সম্পদের প্রাপ্যতা নির্ভর করে।


∆খনিজ সম্পদের প্রকারভেদ (Classification of Mineral Resource)

উৎপত্তি ও প্রকৃতি  অনুসারে খনিজ সম্পদকে নিম্নলিখিত ভাবে বিভক্ত করা যায়—  

A. উৎপত্তি অনুসারে শ্রেণীবিভাগ (According to source) : ভূগর্ভ থেকে প্রাপ্ত খনিজের উৎপত্তি অনুযায়ী খুনি দ্রব্য কে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা--

1. অজৈব খনিজ (Inorganic Minerals) : যে সমস্ত খনিজ প্রকৃতিতে অজৈব উৎস থেকে সৃষ্টি হয়েছে তাকে অজৈব খণিজ বলে । যেমন -লোহা, তামা ,নিকেল ইত্যাদি।

2. জৈব খনিজ ( Organic Minerals) : যে সমস্ত খণিজ প্রকৃতিতে জৈব পদার্থ থেকে (উদ্ভিদ ও প্রাণী) সৃষ্টি হয়েছে তাকে জৈব খনিজ বলে । যেমন -কয়লা, খনিজ তেল, স্বাভাবিক গ্যাস ইত্যাদি ।


B. প্রকৃতি অনুসারে শ্রেণীবিভাগ (According to nature) : প্রকৃতি অনুসারে খনিজ দ্রব্য কে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা--

1. ধাতব খনিজ (Metallic Minerals) : যেসব খনিজ থেকে ধাতু নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়, তাদের ধাতব খনিজ বলা হয়। এগুলিকে তিনটি উপবিভাগে বিভক্ত করা যায়— 

(a) লৌহৰগীয় খনিজ (Ferrous Minerals) : যে ধাতব খনিজগুলিতে লোহার পরিমাণ বেশি থাকে, তাকে লৌহবর্গীয় খনিজ বলে। যেমন—ম্যাগনেটাইট, হেমাটাইট প্রভৃতি। 

(b) লৌহ-সংকর খনিজ (Ferro-Alloy Minerals) : লোহার সঙ্গে যে ধাতব খনিজকে মিশ্রিত করে সংকর লোহা ও ইস্পাত তৈরি করা হয়, তাকে লৌহ-সংকর খনিজ বলে। যেমন- সিসা, তামা, টিন, দস্তা প্রভৃতি। 

(c) অ-লৌহবর্গীয় খনিজ (Non-Ferrous Minerals) : যেসমস্ত ধাতব খনিজ থেকে লোহা জাতীয় ধাতু বা লোহা ছাড়া অন্য কোনো ধাতু পাওয়া যায়, তাদের অ-লৌহবর্গীয় খনিজ বলে। যেমন—বক্সাইট, টিন, তামা প্রভৃতি।

2. অধাতব খনিজ (Non-Metallic Minerals) : যেসব খনিজ থেকে ধাতু নিষ্কাশন করা যায় না, তাদের অধাতব খনিজ বলে। অনুজ্জ্বল প্রকৃতির এই খনিজগুলি সরাসরি শিল্পের কাজে ব্যবহৃত হয়। ধাতব খনিজ আবার তিন প্রকার 

(a) রাসায়নিক খনিজ (Chemical Minerals) : যেসব অধাতব খনিজ থেকে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, কীটনাশক, ওষুধ প্রভৃতি উৎপাদন করা যায়, তাদের রাসায়নিক খনিজ বলে। যেমন—ডলোমাইট, গন্ধক, লবণ, ফসফেট প্রভৃতি। 

(b) স্থাপত্য খনিজ (Structural Minerals) : যেসব অধাতব খনিজ রাস্তা, বাড়ি, সৌধ প্রভৃতি গঠনে ব্যবহৃত হয়, তাদের স্থাপত্য খনিজ বলে। যেমন—মার্বেল, চুনাপাথর,গ্র্যানাইট, জিপসাম প্রভৃতি। 

(e) অন্যান্য অধাতব খনিজ (Other Non-Metallic Minerals) : অন্যান্য অধাতব খনিজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চিনামাটি, গ্রাফাইট, অভ্র প্রভৃতি। 

3. জ্বালানি খনিজ (Fuel Minerals) : যেসব খনিজ দহন করার ফলে তাপ ও শক্তি উৎপাদিত হয়, তাদের জ্বালানি খনিজ বলে। খনিজকে আবার চারটি ভাগে ভাগ করা যায় - (a) কঠিন জ্বালানি খনিজ : কয়লা, (b) তরল জ্বালানি খনিজ : খনিজ তেল, (c) গ্যাসীয় জ্বালানি খনিজ : প্রাকৃতিক গ্যাস, (d) পারমাণবিক খনিজ :  থোরিয়াম, ইউরেনিয়াম প্রভৃতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ