Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ভাঁজের প্রকারভেদ (Types of Fold)

                   ভাঁজের প্রকারভেদ


∆ বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ভাজকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায় । সেগুলি হল
A) আকৃতি অনুসারে:
1) ঊর্ধ্ব ভঙ্গ (Anticline) :
                                          গিরিজনি আলোড়ন এর ফলে সৃষ্ট ভাঁজের যে অংশ ওপরের দিকে উত্তল ভাবে অবস্থান করে তাকে ঊর্ধ্ব ভঙ্গ বলে ।
বৈশিষ্ট্য:
          •এরূপ ভাঁজ উত্তল প্রকৃতির হয়।
          •ঊর্ধ্ব ভঙ্গের বাহুদ্বয়ের নতি পরস্পরের বিপরীত দিকে অবস্থান করে।
        •ঊর্ধ্ব ভঙ্গ ভাঁজের কেন্দ্রে প্রাচীন শিলা স্তর থাকে।
ভূমিরূপ: ঊর্ধ্ব ভঙ্গ শৈলশিরা যুক্ত ভূমিরূপ গঠন করে থাকে।
ঊর্ধ্ব ভঙ্গ

2) ঊর্ধ্ব ভঙ্গ ধারা (Anticlinoriom):
                                                      একটি প্রধান ঊর্ধ্ব ভঙ্গের মধ্যে অনেক ছোট ছোট ঊর্ধ্ব ভঙ্গ ও অধো ভঙ্গ অবস্থান করলে তাকে ঊর্ধ্ব ভঙ্গ ধারা বলে।
ভূমিরূপ: বন্ধুর ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।
ঊর্ধ্বভঙ্গ ধারা

3) অধো ভঙ্গ (Syncline):
                                     ভাজের যে অংশ অবতল হয়ে অবস্থান করে তাকে অধো ভঙ্গ বলে ।
বৈশিষ্ট্য;
          •এই ভাঁজ অবতল প্রকৃতির হয়।
          •অধো ভঙ্গে বাহুদ্বয়ের নতি পরস্পরের দিকে হেলে থাকে।
          •অধো ভঙ্গ ভাঁজের কেন্দ্রে নবীন শিলা স্তর থাকে।
ভূমিরূপ: অধো ভঙ্গ উপত্যাকা গঠন করে।

4) অধো ভঙ্গ ধারা (Synclinorioum):
                                                     একটি অধোভঙ্গের মধ্যে অনেক ছোট ছোট অধো ভঙ্গ ও ঊর্ধ্ব ভঙ্গ একসঙ্গে অবস্থান করলে তাকে অধো ভঙ্গ ধারা বলে।
ভূমিরূপ: অবনত প্রকৃতির বন্ধুর ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।



B) বাহুদ্বয়ের অন্তঃস্থথ কোণের মান অনুসারে:
1) মৃদু ভাঁজ : ভাঁজের বাহুদ্বয়ের অন্তঃস্থ কোণের মান ১২০°র বেশি হলে তাকে মৃদু বলে।
2) মুক্ত ভাঁজ: ভাঁজের বাহুদ্বয়ের অন্তঃস্থ কোণের মান ৭০-১২০° মধ্যে হলে তাকে মুক্ত ভাজ বলে।
3) বদ্ধ ভাঁজ: ভাঁজের বাহুদ্বয়ের অন্তঃস্থ কোণের মান ৩০-৭০° মধ্যে হলে তাকে বদ্ধ ভাঁজ বলে।
4) সংকীর্ণ ভাঁজ: ভাঁজের বাহুদ্বয়ের অন্তঃস্থ কোণের মান ৩০° র কম হলে তাকে সংকীর্ণ ভাঁজ বলে।



C) অক্ষ তলের ভিত্তিতে:
1) প্রতিসম ভাঁজ (Symmetrical Fold):
                                                             যে ভাঁজের দুইদকের বাহুর নতি ও দৈর্ঘ্য সমান, তাকে প্রতিসম ভাঁজ বলে।
বৈশিষ্ট্য:
          •এই ভাঁজের উভয়দিকে নতি সমান ও বিপরীতমুখী।
          •ভাঁজের বাহু দুটি দৈর্ঘ্য সমান হয়।
         •ভাঁজের অক্ষতল উলম্ব থাকে।
ভূমিরূপ : প্রতিসম শৈলশিরার সৃষ্টি হয়।
প্রতিসম ভাঁজ

2) অপ্রতিসম ভাঁজ (Asymmetrical Fold):
                                                               যে ভাঁজের দু'পাশের বাহুর দৈর্ঘ্য সমান হয় এবংং বাহু দুটি দুই দিকে ভিন্ন কোণে হেলে থাকে, তাকে অপ্রতিসম ভাঁজ বলে।
বৈশিষ্ট্য:
          •ভাজের বাহু দুটি দৈর্ঘ্য অসমান হয়।
          •বাহু দুটি দুই দিকে ভিন্ন কোণে হেলে থাকে।
          •এই ভাঁজের অক্ষতল হেলে থাকে।
ভূমিরূপ: অপ্রতিসম শৈলশিরার সৃষ্টি হয়।
অপ্রতিসম ভাঁজ

3)আবৃত বা বিপর্যস্ত ভাঁজ(Over Fold):
                                                            যখন কোন অপ্রতিসম ভাঁজের অক্ষতল হেলে অবস্থান করে এবং বাহুদ্বয় একই দিকে কিন্তু ভিন্ন কোণে হেলে থাকে ,তখন তাকে আবৃত বা বিপর্যস্ত ভাঁজ বলে।
বৈশিষ্ট্য:
          •আবৃত ভাঁজের অক্ষতল হেলে অবস্থান করে।
           •ভাঁজের বাহু দুটি একই দিকে কাত হয়ে থাকে।
ভূমিরূপ :বন্ধুর প্রকৃতির ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।


4) শায়িত  ভাঁজ (Recumbent Fold):
                                                       অনুভূমিক চাপ বৃদ্ধির ফলে একটি বাহু যদি সম্পূর্ণভাবে অপর বাহু দুইটির ওপর অবস্থান করে এবং অক্ষতল ভূমি ভাগের প্রায় সমান্তরালে থাকে তখন তাকে শায়িত ভাঁজ বলে।
বৈশিষ্ট্য:
           •অক্ষতল ভূমির সমান্তরালে অবস্থান করে।
           •ভাঁজের নতির মান ১০°কম থাকে।
ভূমিরূপ: সমান্তরালে ভূমি দর্শন সৃষ্টি করে।
শায়িত ভাঁজ

5) উদ্ভঘট্ট ভাঁজ(Over There Fold) :
                                                       কোন শায়িত ভাঁজ এর ওপর অনুভূমিক চাপ বৃদ্ধি পেলে ভাঁজ টির মধ্যভাগের শিলা সমূহ ফেটে যায় এবং একটি অংশ অপর অংশ থেকে বেশ কিছুটা দূরে সরে যায় এই প্রকার ভাঁজকে উদঘট্ট ভাঁজ বলে।
বৈশিষ্ট্য:
           •ভাঁজের অক্ষতল ভূমির সমান্তরালে অবস্থান করে।
           •ভাজের একটি অংশ অপর অংশ থেকে দূরে সরে যায়।
ভূমিরূপ :অপ্রতিসম উচ্চভূমি সৃষ্টি হয়।


6) ন্যাপ (Nappe): বিশাল আয়তন বিশিষ্ট শায়িত ভাঁজ উৎস স্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে স্থানান্তরিত হলে তাকে ন্যাপ বলে।

7) সমনত বা সমপ্রবন ভাঁজ (Isoclinal fold): যদি ভাঁজের বাহু দুটি সমান কোনে একদিকে পরস্পরের সমান্তরালে নত থাকে ,তাকে সমপ্রবণ ভাঁজ বলে।
সমনত ভাঁজ

8) একনত ভাঁজ (Monoclonal Fold): যে ভাঁজে শিলাস্তরের নতি একই দিকে থাকে তাকে একনত ভাঁজ বলে।
একনত ভাঁজ


D) অন্যান্য ভাঁজ :
1)Fan Fod or Umbrella Fold : যে ভাঁজর এর উপরের অংশ ছড়ানো এবং নিচের বাহুদ্বয় পরস্পরের অপেক্ষাকৃত কাছে অবস্থিত হয়ে পাখার মত বা ছাতার মত দেখায়, তখন তাকে পাখা ভাঁজ বলে।

2)বাক্স ভাঁজ(Box Fold) : ভাঁজের শীর্ষ দেশ এবং মধ্যভাগ চওড়া ও সমতল এবং প্রান্তদেশ সর্বাধিক বাঁক নিয়ে থাকলে এরূপ ভাঁজ দেখতে অনেকটা বক্স আকৃতির হয়, তাই একে বাক্স ভাঁজ বলে।

3) বিসদৃশ ভাঁজ ( Disharmonic Fold) : কোনো কোনো ভাঁজে ঊর্ধ্ব ভঙ্গের নিচে ঊর্ধ্ব ভঙ্গ সৃষ্টি না হয়ে ঊর্ধ্ব ভঙ্গ -অধো ভঙ্গ সৃষ্টি হলে ভাঁজের মধ্যে সাদৃশ্য নষ্ট হয়ে যায়। এরূপ ভাঁজকে বিসদৃশ ভাঁজ বলে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ