প্রাকৃতিক গ্যাস (Natural Gas)
প্রধানত তেলের খনি থেকে খনিজ তেল আহরণ করার সময়ে ইথেন, মিথেন, বুটেন, প্রপেন মিশ্রিত যে দাহ্য গ্যাস বাইরে নির্গত হয়, তাকে প্রাকৃতিক গ্যাস বলে। তৈলখনিতে জল ও খনিজ তেলের উপরে অবস্থান করে প্রাকৃতিক গ্যাস।
∆প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার : প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার গুলি হল নিম্নরূপ-
1.পরিবহন : অপেক্ষাকৃত সস্তা প্রাকৃতিক বা CNG ও LPG দ্বারা ছোট ছোট যানবাহন যেমন- মারুটি ও ট্যাক্সি চালানো হয় । প্রাকৃতিক গ্যাস জ্বালানো সাশ্রয়কারী দূষণহীন হওয়ায় পরিবহনে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি হচ্ছে।
2. শিল্প : কলকারখানায় মেশিন ও যন্ত্র চালাতে বয়লার ও চুল্লিতে জ্বালানি রূপে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয়।
3. বিদ্যুৎ উৎপাদন : বিশ্বের উন্নত মান দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের সাহায্যে তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় । প্রাকৃতিক গ্যাসের দহনে কম কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। বর্তমানে ভারতে গ্যাসভিত্তিক 10% তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
4. গৃহস্থালির কাজে : আধুনিককালে গৃহের রান্নার কাজে, আলো জ্বালাতে, গৃহ উষ্ণ রাখতে দূষণহীন প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয় । ভারতের লক্ষ্য লক্ষ্য বাড়িতে রান্নার কাজে যে জ্বালানি গ্যাস ব্যবহৃত হয় তা অধিকাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস।
5. পেট্রোরসায়ন শিল্প : পেট্রোরসায়ন শিল্পের কাঁচামাল রূপে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয় , তা থেকে কৃত্রিম তন্তূ, কীটনাশক, রং, রাসায়নিক সার, উৎপাদিত হয়।
6. অন্যান্য : রাস্তাঘাট আলোকিত করতে, হোটেল ও রেস্টুরেন্টের জ্বালানি ও শক্তির যোগান প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
∆ভারতের প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদক অঞ্চল : ভারতের প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন শুরু হয় 1889 সালে অসমের ডিগবয় তৈল খনির মধ্যে দিয়ে ভারতের প্রাকৃতিক গ্যাস অধিকাংশই তৈলখনি থেকে পাওয়া যায়। ONGC,OIL, Relience Industry Limited সংস্থা 151টি গ্যাসক্ষেত্র এবং 121টি তৈলগ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করে ,এগুলি হল-
1) উপকূলীয় গ্যাস তৈল ক্ষেত্র : দেশের 75% গ্যাস সমুদ্রের অগভীর মহীসোপান থেকে সংগৃহীত হয়। মহারাষ্ট্রের হাই ও পান্না, তাপ্তি, মুক্তা 24টি গ্যাস ও 57টি গ্যাস তৈলক্ষেত্রে থেকে সবথেকে বেশি গ্যাস উত্তোলন হয় বোম্বে হাই হলো ভারতের বৃহত্তম গ্যাস ভান্ডার। গুজরাটের কাম্বে ও কচ্ছ, কাবেরী মোহানা, অন্ধপ্রদেশের গোদাবরী মোহানা, উড়িষ্যার মহানদী মোহানা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপকূল অঞ্চলের প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা হয়।
2) অন্তর্দেশীয় গ্যাস ও তৈল ক্ষেত্র : দেশের মাত্র 25% গ্যাস এখানে উত্তোলন হয় গুজরাটের কাম্বে বেসিনে 7টি গ্যাস ক্ষেত্র ও 74টি তেল গ্যাস ক্ষেত্র থেকে সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপন্ন হয়।এছাড়া অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ,ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ড, আরাকান অববাহিকা, রাজস্থানের যোধপুর ,জয়সালমীর ; তামিলনাড়ুর কাবেরী উপত্যকা ,অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণ ও গোদাবরী উপত্যকা, পশ্চিমবঙ্গের রানীগঞ্জ মধ্যপ্রদেশের সুহাগপুর ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া ও বোকারো থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন হয়।
0 মন্তব্যসমূহ