Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সমুদ্রবক্ষের প্রসারণ (Sea Floor Spreading) আলোচনা করো

                   সমুদ্রবক্ষের প্রসারণ 


ভূমিকা : মার্কিন ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক হ্যারি হ্যামন্ড হে (Harry Hammond Hess) মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরার দুই পাশে সমুদ্রবক্ষের বিস্তার সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন এবং 1862 খ্রিস্টাব্দে তার History of Ocean Basin নামক বইতে সমুদ্রবক্ষের প্রসারণের তত্ত্ব প্রকাশ করেন। বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক ভূমিরূপ সংক্রান্ত ঘটনাবলির সাহায্যে সমুদ্রবক্ষ বিস্তারের ঘটনাটিকে প্রমাণ করা যায় ।

           অধ্যাপক হেস প্রধানত যেসব তত্ত্ব বা ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্রবক্ষ বিস্তার সম্পর্কিত ধারন প্রদান করেন তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল বেকনের আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর, ওয়েগনারের মহাদেশীয় সঞরণ, হােমসের তাপীয় পরিচলন স্রোতের ধারণা প্রভৃতি।


মুল ধারণা : অধ্যাপক হ্যারি হেস-এর মতে, ভূ-অভ্যন্তরে সৃষ্ট উত্তপ্ত ও উর্ধ্বমুখী পরিচলন স্রোতের প্রভাবে মহাসাগরীয় পাতগুলির বিপরীতমুখী সরণ ঘটে এবং ভূত্বকে ফাটল সৃষ্টি হয়। এই ফাটল বরাবর ভূগর্ভের উত্তপ্ত গলিত পদার্থ বা ম্যাগমা লাভা রুপে বাইরে নির্গত হয় এবং ফাটল বরাবর সঞ্চিত হয়ে মধ্যসামুদ্রিক শৈলশিরা গঠন করে। ক্রমাগত মধ্যসামুদ্রিক শৈলশিরার উপরে অবস্থিত ফাটল বরাবর নির্গত লাভা শৈলশিরার দুই পাশে সঞ্চিত হয়। নতুন মহাসাগরী ভূত্বক সৃষ্টি হয় এবং দুইদিকের স্থলভূমির দিকে সরে যায়। ওই অঞ্চলে সৃষ্ট শূনাস্থানে আবার লাভা সঞ্চিত হয়ে নতুন মহাসাগরীয় ভূত্বক গঠন করে। এইভাবে সমুদ্রবক্ষের প্রসারণ ঘটে।

সমুদ্রবক্ষের প্রসারণ

সমুদ্রবক্ষ প্রসারণের প্রমাণসমূহ : সমুদ্রবক্ষ প্রসারণের সমর্থনে বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক ঘটনা গুলি হল -

1) অবক্ষেপের বয়স : মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা থেকে যত দূরে অগ্রসর হওয়া যায়, তত মহাসাগরীয় ভূত্বকের অবক্ষেপের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এই অবক্ষেপের উপরের ভরের তুলনায় নীচের ওর স্বাবতই বেশি প্রাচীন হয়ে থাকে। অর্থাৎ মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিয়া থেকে দূরবর্তী স্থানে মহাসাগরীয় ভূত্বকের বয়স ক্রমশ বৃদ্ধি পায় যা সময়ক্ষের বিস্তারকে প্রমাণ করে ।

2) আগ্নেয়শিলার বয়স : মহাসাগরের তলদেশ থেকে সংগৃহীত আগ্নেয়শিলার নমুনা থেকে জানা যায়, মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা থেকে ক্রমশ বাইরের দিকে শিলার বয়স বৃদ্ধি পায় যা সমুদ্রবক্ষের বিস্তারকে প্রমাণ করে।

3) ভূমিকম্পন কেন্দ্রের অস্তিত্ব : মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরার নীচে অসংখ্য ভূমিকম্প কেন্দ্রের অবস্থান ওই অঞ্চলের অস্থিতিশীল অবস্থাকে প্রমাণ করে। 

4) অগ্ন্যুৎপাতের হার বৃদ্ধি : ঊর্ধ্বমুখী পরিচলন স্রোতের প্রভাবে উত্তপ্ত ম্যাগমা শৈলশিরার নীচ পর্যন্ত পৌছােতে সক্ষম হওয়ায় এই স্থানে ভূতাপ প্রবাহ অন্যান্য অংশের তুলনায় প্রায় 3-4 গুণ বেশি। ফলে অগ্ন্যুৎপাতের মাত্রাও এই অংশে যথেষ্ট বেশি, যা অঞ্চলটির গাঠনিক দিক থেকে অথিতিশীলতাকে প্রমাণ করে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ