Header Ads Widget

Responsive Advertisement

আটলান্টিক মহাসাগরে সমুদ্রস্রোতের বন্টন (Distribution of Ocean Currents in the Atlantic Ocean)

  আটলান্টিক মহাসাগরে সমুদ্রস্রোতের বন্টন 


পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর আটলান্টিকের দুই প্রান্তভাগ মেরু অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এখানে শীতল স্রোত এবং মধ্যভাগে নিরক্ষরেখা থাকায় এই স্থানে উষ্ণ স্রোত সৃষ্টি হয়েছে।

A)উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় স্রোত :

উষ্ণ স্রোতসমূহ :

1, উত্তর নিরক্ষীয় উষ্ণ স্রোত : উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে নিরক্ষরেখার উত্তরদিক দিয়ে যে উষ্ণ স্রোত পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়, তাকে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত বলে। 

2.ক্যারিবিয়ান স্রোত : দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত ব্রাজিলের রক অন্তরীপে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। উত্তরের শাখাটি উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়ে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের নিকট পুনরায় দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণের শাখাটি ক্যারিবিয়ান স্রোত নামে পরিচিত।

3. বাহামা স্রোত : পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের উত্তরে বাহামা দ্বীপপুঞ্জের নিকট দিয়ে প্রবাহিত নিরক্ষীয় স্রোতের অপর শাখাটি বাহামা স্রোত নামে পরিচিত।

4.ফ্লোরিডা স্রোত : মেক্সিকো উপসাগরের ফ্লোরিডার কাছে ক্যারিবিয়ান স্রোতটির নাম হল ফ্লেরিডা স্রোত।।

5.উপসাগরীয় স্রোত : ফ্লোরিডা স্রোত বাহামা স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়ে মেক্সিকো উপসাগর থেকে উপসাগরীয় স্রোত নাম নিয়ে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে উত্তর-পূর্বে প্রবাহিত হয়েছে এবং তিনটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে। যথা- 

a] ইরমিঙ্গার স্রোত : আইসল্যান্ডের দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত উপসাগরীয় স্রোতের উত্তরের শাখাটি ইরমিঙ্গার স্রোত নামে পরিচিত।

b] উত্তর আটলান্টিক স্রোত : উপসাগরীয় স্রোতের মধ্যম শাখাটি ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ ও ইউরােপের মধ্য দিয়ে উত্তর আটলান্টিক স্রোত নাম নিয়ে উত্তর পূর্বে প্রবাহিত হয়েছে।

c]ক্যানারি স্রোত ও উপসাগরীয় স্রোতের দক্ষিণের শাখাটি ক্যানারি স্রোত নামে পরিচিত। এটি পূর্বে প্রবাহিত হয়ে আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অবশেষে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

6. গিনি স্রোত : ক্যানারি স্রোতের একটি শাখা আফ্রিকার গিনি উপসাগর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের বেঙ্গুয়েলা স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়েছে, একে গিনি স্রোত বলে।


শীতল স্রোতসমূহ :

1.গ্রিনল্যান্ড স্রোত : সুমেরু মহাসাগর থেকে গ্রিনল্যান্ডের পূর্ব উপকূল বরাবর দক্ষিণে প্রবাহিত শীতল স্রোতটি গ্রিনল্যান্ড স্রোত নামে পরিচিত।

2. ল্যাব্রাডর স্রোত : সুমেরু মহাসাগর থেকে গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূল বরাবর দক্ষিণে প্রবাহিত স্রোতটি ল্যাব্রাডর স্রোত নামে পরিচিত।


* হিমপ্রাচীর : নিউফাউন্ডল্যান্ডের নিকট ল্যাব্রাডর স্রোত, গ্রিনল্যান্ড স্রোত ও ইরমিঙ্গার স্রোত পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। উয় ও শীতল স্রোতের মিলনের ফলে এখানে ঘন কুয়াশা ও হিমপ্রাচীর লক্ষ করা যায় ।


*শৈবাল সাগর ও উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, উপসাগরীয় স্রোত ও ক্যানারি স্রোতের মিলিত জলাবর্তের মধ্যভাগ প্রায় শ্রোতহীন থাকায় এখানে জলজ উদ্ভিদ, শৈবাল ও আগাছা জন্মায়। শ্রোতহীন এই অংশকে শৈবাল সাগর বলে।

আটলান্টিক মহাসাগরের সমুদ্র স্রোতের বন্টন


B)দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরীয় স্রোত :

উষ্ণ স্রোতসমুহ :

1.দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত : দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে নিরক্ষরেখার দক্ষিণদিকে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত উয় স্রোতটি দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত নামে পরিচিত

 2.ব্রাজিল স্রোত : দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতটি ব্রাজিলের রক অন্তরীপে বাধা পেয়ে যে দুটি শাখায় বিভক্ত হয় তার দক্ষিণের শাখাটি ব্রাজিল স্রোত নামে পরিচিত। এটি ব্রাজিল উপকূল বরাবর দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে শীতল কুমেরু স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।


শীতল স্রোতসমূহ :

কুমেরু মহাসাগরীয় স্রোত : পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত শীতল কুমেরু মহাসাগরীয় স্রোতটি আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে। যথা-

a]ফকল্যান্ড স্রোত : কুমেরু স্রোতের উত্তরের শাখাটি দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূলের ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের নিকট দিয়ে ফকল্যান্ড স্রোত নামে প্রবাহিত হয়েছে।

 b]বেঙ্গুয়েলা স্রোত : কুমেরু স্রোতের অপর শাখাটি পূর্বে প্রবাহিত হয়ে আফ্রিকার দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলে বাধা পেয়ে বেঙ্গুয়েলা স্রোত নাম নিয়ে উত্তরে বেঁকে গেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ