এক্স সিটু সংরক্ষণ (Ex-situ Conservation) বলতে কী বোঝ?

এক্স সিটু সংরক্ষণ 

এক্স সিটু সংরক্ষণ (Ex-situ Conservation): উদ্ভিদ ও প্রাণীর নিজস্ব প্রাকৃতিক আবাসস্থলের বাইরে তাদের সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে এক্স সিটু সংরক্ষণ বলে। যেমন—চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ক্রায়োসংরক্ষণ।

(a) চিড়িয়াখানা (Zoological garden): পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরের চিড়িয়াখানা, দার্জিলিং-এর পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান চিড়িয়াখানা, দিল্লির চিড়িয়াখানা উল্লেখযোগ্য চিড়িয়াখানা।

বৈশিষ্ট্য :(i) চিড়িয়াখানায় দেশ-বিদেশের প্রাণী প্রজাতি সংরক্ষিত হয়। (ii) প্রাণীরা এখানে স্বাধীনভাবে থাকতে পারে না, শিকার করতে পারে না। এদের খাঁচার মধ্যে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হয়। (iii) স্বল্প কিছু প্রাণীর প্রজননের ব্যবস্থা রয়েছে।

সংরক্ষিত প্রাণী : বাঘ, সিংহ, ভালুক, জিরাফ, জেব্রা, গন্ডার, বানর, হরিণ, নানা প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ইত্যাদি।

(b)বোটানিক্যাল গার্ডেন : পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার শিবপুরের ইন্ডিয়ান বোটানিক্যাল গার্ডেন বিখ্যাত। এছাড়া দার্জিলিং-এর লয়্যাড বোটানিক্যাল গার্ডেনও প্রসিদ্ধ।

বৈশিষ্ট্য : (i) দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি সংরক্ষিত। (ii) উদ্ভিদগুলি স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠেছে, বংশবিস্তার করতে পারে। তবে এদের পরিচর্যা করার ব্যবস্থা আছে।

উদাহরণ : শিবপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সবচেয়ে দর্শনীয় উদ্ভিদ হল বট গাছ । এছাড়া বাঁশ গাছ, অর্জুন গাছ, নানারকমের অর্কিড, লতা-গুল্ম শোভা পায়। 

(c)কায়ো সংরক্ষণ (Cryopreservation) : যে পদ্ধতিতে সমগ্র কোশ অথবা কলাকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য 0°C-এর নীচে সংরক্ষণ করা হয় তাকে ক্রায়ো সংরক্ষণ বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য : (i) উদ্ভিদ নমুনাগুলিকে বিশেষ প্রকৌশলে - 190°C তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনে সংরক্ষণ করা হয়। (ii) পুরো সংগ্রহশালা - 136°C-এ রাখা হয়। নমুনাগুলিকে বিশেষ পাত্রে কাচের আলমারিতে সংরক্ষণ করে রাখা থাকে। (iii) জার্মপ্লাজম বহুদিন ধরে সংরক্ষিত রাখা হয়।

উদাহরণ : ক্রায়ো সংরক্ষিত এলাকায় যেসব উদ্ভিদ নমুনা সংরক্ষিত থাকে সেগুলি হল—উদ্ভিদের মুকুল, ভ্রূণ, বীজ, পরাগরেণু, উদ্ভিদের কলা ইত্যাদি ।