Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ভূমিকম্প(Earthquake) | ভূমিকম্পের কারণ সমূহ (Causes of Earthquake)

                            ভূমিকম্প


ভূমিকম্পের সংজ্ঞা: পৃথিবীর স্থিতিস্থাপক অভ্যন্তরে কোন সঞ্চিত শক্তি হঠাৎ মুক্ত হয়ে গেলে ভূত্বক কেঁপে ওঠে তাকে ভূমিকম্প বলে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্র: ভূত্বক থেকে কিছুটা গভীরতাই যেখানে ভূকম্প তরঙ্গের উৎপত্তি হয় সেই স্থানটিকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে।

ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র : ভূমিকম্পের কেন্দ্রের থেকে ঠিক উলম্বভাবে ভূপৃষ্ঠ অবস্থিত যে স্থানে প্রথমে কম্পন তরঙ্গ পৌঁছায় সেই স্থানকে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র বলে।


ভূমিকম্পের কারণ সমূহ (Causes of earthquake)

ভূমিকম্পের জন্য দায়ী সম্ভাব্য কারণ গুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা প্রাকৃতিক কারণ মানবিক কারণ 

A)প্রাকৃতিক কারণ(Tectonic causes)

1)পাত সঞ্চালন জনিত কারণ : ভূ বিজ্ঞানীদের মতে ভূত্বক কতগুলি চলমান পাতা দ্বারা গঠিত । এই পাতগুলি পরিচলন স্রোত এর দ্বারা পরিচালিত হয় সংঘর্ষের ফলে বা হালকা পাতের নিচে ঢুকে পড়ে তখন ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় ।

2)অগ্নুৎপাত : আগ্নেয়গিরি থেকে গলিত লাভা সজোরে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসার সময় স্থিতিস্থাপকতা নষ্টের কারণে ভূকম্পনের সৃষ্টি হয় ।

3)ধ্বস : পাহাড়ের ঢালু অংশে বৃষ্টিপাতের ফলে ধ্বস নামে ফলে তখন ভূকম্পনের সৃষ্টি হয়।

4)চ্যুতি : উপরের অত্যধিক চাপে ভূত্বকে শিলাচ্যুতি হলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।

5)ভূ আলোড়ন : ভূ আলোড়ন এর ফলে ভূত্বকের উপরিভাগে ভঙ্গিল পর্বত ও গ্রস্ত উপতাকা চ্যুতি সৃষ্টির সময় প্রবল ভূমিকম্প হয়।

6)তাপ বিকিরণ : তাপ বিকিরণ এর ফলে ভূগর্ভ ক্রমশ সংকুচিত হওয়ার সময় এবং ভূত্বকে ভাঁজ পড়ার সময় ভূত্বক কেঁপে ওঠে।

7)ভূগর্ভের জল প্রবেশ: বিভিন্ন ফাটল দিয়ে ভূপৃষ্ঠের জল ভূগর্ভে প্রবেশ করলে ভূগর্ভের তাপে প্রচুর বাষ্পের সৃষ্টি হয় এই বাষ্পের ঊর্ধ্বমুখী চাপের ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

8)হিমানী সম্প্রপাত: হিমবাহ অঞ্চলে উচ্চ পর্বতগাত্র থেকে মাঝে মাঝে বৃহদাকার বরফখণ্ড হিমবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিচে পতিত হয় এরূপ বরফখন্ডের আঘাতে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।


B)মানবিক কারণ( Man made causes)

1)কৃত্রিম জলাধার :নদীতে বাঁধ দেওয়ার মাধ্যমে কৃত্রিম জলাধার সৃষ্টি করলে বিপুল জলরাশি পাদদেশের শিলাস্তরের উপর যে চাপ সৃষ্টি করে তার ফলে শিলাস্তরে স্থানচ্যুতি ঘটার ফলে ভূকম্পনের সৃষ্টি হয়।

2)খনি অঞ্চলে ধ্বস: খনিজ পদার্থ আহরণের ফলে খনির উপরের অংশ ধ্বসের মাধ্যমে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

3)পারমাণবিক বিস্ফোরণ: মাটির নিচে পারমানবিক বোমা পরীক্ষার সময় বা পার্বত্য অঞ্চলে সড়ক পথ নির্মাণ এবং খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য পারমানবিক বোমা ফাটানো হলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।


ভূমিকম্পের প্রভাব সমূহ (Effects of earthquake)

1)চ্যুতি গঠন : ভূমিকম্পের ফলে বিশাল খান জুড়ে চ্যূতি গঠিত হতে পারে। 

2)হ্রদের উৎপত্তি : ভূমিকম্পের প্রভাবে সম সংগঠিত হলে নদীর গতিপথ রুদ্ধ হয়ে হ্রদের উৎপত্তি ঘটে। 

3)নদীর প্রবাহপথের পরিবর্তন : ভূমিকম্পের প্রবাহে সৃষ্ট ভুমিধসের কারণে দীর প্রবাহ পথে শিলাপ সয়ের ফলে অবরুদ্ধ হলে নদী তার প্রবাহপথ পরিবর্তন করে। 

 4)ভূনিম্নস্থ জলনির্গম প্রণালীর পরিবর্তন : ভূমিকম্পের ফলে কোনাে স্থানে প্রাচীন প্রশ্রবণের প্রবাহের মাত্রা পরিবর্তিত হয়, কোথাও আবার নতুন প্রশ্রবণ গড়ে ওঠে।

5) সমুদ্রতলের পরিবর্তন : সমুদ্রতলের কোনাে অংশে ভূমিকম্পের ফলে উত্থিত বা অবনমিত হতে পারে। 

6)সুনামির উৎপত্তি : ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র সাগর-মহাসাগরের তলদেশে অবস্থিত হলে সুনামির উৎপত্তি ঘটে। 

7)সস্পদ ও সম্পত্তির বিনাশ : ভূমিকম্পের ফলে প্রচুর ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ টেলিফোন, টেলিগ্রাফের পােস্ট, টাওয়ার, ব্রিজ, বাঁধ, পাইপলাইন, রেললাইন প্রতি সেপ্রাপ্ত হয় এবং অসংখ্য মানুষ ও প্রাণীরও জীবনহানি ঘটে ও কোনাে অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

8) জলাভূমি গঠন : ভূমিকম্পের প্রভাব বিশালায়তন স্থান অবনমিত হওয়ার ফলে জলাভূমির সৃষ্টি হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ